প্রতিষ্ঠানের সংক্ষীপ্ত পরিচিতি

image-not-found

ভূমিকাঃ

বর্বর যুগে নারী-
নারী জাতি সর্ব কালে সকল সমাজে নির্যাতিত-নিপীড়িত ও অবহেলিত হয়ে আসছিল। জাহিলিয়াতের যুগে বিভিন্নভাবে নারী জাতি নির্যাতনের শিকার হত। এমনকি কন্যা সন্তানদেরকে জীবন্ত দাফনও করা হত।

বর্তমান যুগ ও নারী জাতি
শিক্ষা ও আধুনিকতার যুগে অত্যাধুনিকতার নামে নরীরা অত্যাচারিত হয়ে চলেছে। যেমন- সহশিক্ষা, চাকুরি, নারী প্রতিষ্ঠা, নারী অধিকার, নারীর সমান অধিকার, নারীবাদ, মানবাধিকার ইত্যাদি মুখরোচক শ্লোগান দিয়ে সমাজে বেহায়াপনা ও অশ্লীলতার সয়লাব বয়ে যাচ্ছে। কথাগুলো শুনতে চমৎকার শুনালেও এগুলোর নেপথ্যে সূক্ষ্মভাবে নারী জাতি তথা মাতৃ সমাজকে পদে পদে উপেক্ষিত, বঞ্চিত ও লাঞ্চিত হতে হচ্ছে। তা কেবল প্রকৃত জ্ঞানী ও প্রাজ্ঞ লোকেরাই সঠিকভাবে অনুধাবন করতে পারেন। সমাজ সচেতন ব্যক্তিবর্গের নিকট সেসব বিষয় অজ্ঞাত নয়।

ইসলামী সমাজ ব্যাবস্থা ও নারী
জান-মাল, ইজ্জত-আব্রু, অধিকার ও মান-মর্যাদা এক কথায় সর্ব ক্ষেত্রে ইসলামই কেবল নারী জাতিকে সঠিক মান দিতে সক্ষম হয়েছে। জাহিলিয়্যাতের বর্বর আচরণ ও পশুত্বের মানবেতর জীবন থেকে ‍মুক্তি দিয়ে মর্যাদার জীবন দিয়েছে। সম্মানের সর্বোচ্চ আসনে সমাসীন করে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেছেন- “নিশ্চয়ই জান্নাত মায়েদের পদতলে”। সুবহানাল্লাহ!

দীনি শিক্ষা ও নারী জাতি
নারীদের জন্য যেমনিভাবে দীনি ইলম অর্জন করা ফরয, তেমনিভাবে পর্দা করাও অপরিহার্য্য ফরয। তাই একটিকে গুরুত্ব দিয়ে অপরটিকে বাদ দেওয়া বা খাটো করার কোনো সুযোগ নেই। সুতরাং উক্ত উভয় ফরয বিধানের প্রতি সমান গুরুত্ব দিয়েই আল্লাহর রহমতের ওপর ভরসা করে আমরা অভিজ্ঞ উলামায়ে কেরামের সাথে পরামর্শক্রমে নারীদের সুষ্ঠ ও দীনি শিক্ষার জন্য “তা’লীমুন নিসওয়ান” নামে একটি আদর্শ মহিলা মাদরাসার সূচনা করেছি। আলহামদুলিল্লাহ!

কন্য সন্তানকে ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত করার (মাদরাসায় পড়ানোর) ফযীলত
হযরত ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন- “যে ব্যক্তি তিন জন কন্যা সন্তান অথবা এপরিমাণ বোন-এর প্রতিপালন করবে অর্থাৎ তাদেরকে আদব-কায়দা শিক্ষা দিবে এবং স্নেহভরে লালন-পালন করবে যতদিন না আল্লাহ তাআলা তাদেরকে পরনির্ভরশীলতা মুক্ত করেন, সেই ব্যক্তির জন্য মহামহিম আল্লাহ জান্নাত অবধারিত করে দিবেন। এমনকি দু’জন কন্যা সন্তান বা একজন কন্যা সন্তানকে দীনি শিক্ষা দিলেও একই ফযীলত। (শরহুস সুন্নাহ, মিশকাতুল মাসাবীহ- 423 পৃষ্ঠা।)

আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
1. আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জন ও পরকালে মুক্তি লাভ।
2. প্রতিটি শিক্ষার্থীর জীবনে আল্লাহ তাআলার হুকুম অনুযায়ী রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আদর্শকে পরিপূর্ণরূপে বাস্তবায়ন।
3. প্রত্যেক ছাত্রীকে কুরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক জাগতিক ও অধুনিক শিক্ষা দানের মাধ্যমে
দক্ষ ও যুগপযোগী করে গড়ে তোলা।
4. পোশাক-পরিচ্ছদ, আচার-আচরণসহ সর্বক্ষেত্রে সুন্নাতের বাস্তব নমুনা হিসেবে প্রস্তুত করা।
5. যুগ সচেতন সচ্চরিত্রবান একদল আদর্শ নারীর প্রত্যয়ী কাফেলা তৈরি করে দেশ ও জাতির সর্বস্তরের নারী সমাজের কাছে দীনি দাওয়াত ও ইসলামী শিক্ষা পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে সুশীল সমাজ গড়ায় ভূমিকা রাখা এবং মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা।

আমাদের বৈশিষ্টাবলী
1. পরহেযগার মহিলা শিক্ষিকাদের মাধ্যমে পাঠদান।
2. ক্লাসেই পাঠ মুখস্থ করানোর জরুরী ও উপযোগী ব্যবস্থা গ্রহণ।
3. আশপাশের এলাকার ছাত্রীদের জন্য অনাবাসিক সু-ব্যবস্থা।
4. দূরের ছাত্রীদের জন্য সুনিয়ন্ত্রিত আবাসিক উন্নত ব্যবস্থা।
5. শরীয়ত সম্মত খাস পর্দার ব্যবস্থা।
6. স্বাস্থ্যসম্মত উন্নত মানের খাবারের ব্যবস্থা।
7. প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা।
8. আগ্রহী ও উত্তীর্ণ ছাত্রীদের অভিজ্ঞ মহিলা টেইলারের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সেলাই কাজ শেখানোর ব্যবস্থা।
9. দীনি শিক্ষার পাশাপাশি বাংলা, গণিত ও ইংরেজি শিক্ষার সু-ব্যবস্থা।
10. ছোট ছাত্রীদেরকে আয়ার মাধ্যমে গোসল, জামা-কাপড় ধোয়া ও পরিচর্যার ব্যবস্থা।
11. মাদরাসা ক্যাম্পাসের ভিতরেই সুলভ মূল্যে জামা-কাপড়সহ নিত্য প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ও নাস্তার সামগ্রীর কেন্টিনের ব্যবস্থা।

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ

image-not-found

মানব জাতির সূচনালগ্ন থেকে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে মানুষ প্রতিনিয়ত জ্ঞান ও কৌশল আয়ত্ব করে চলছে। আর শত সহস্র বছরের সঞ্চিত ও অর্জিত জ্ঞান শেখানো হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। যুগের প্রয়োজনে মানবের কল্যাণে সমাজ হিতৈষী ব্যক্তিরা কখনো কখনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। এমনইভাবেই দক্ষ, অভিজ্ঞ, জ্ঞানে সু-গভীর ও বিদ্যানুরাগী এক মহাপুরুষ মরহুম অধ্যাপক মুফতী মুহাম্মদ আছেম সাহেবও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দক্ষ, যোগ্য, আদর্শ ও সুনাগরিক রূপে গড়ে তোলার অভিপ্রায় নিয়ে নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলাধীন ১১ নং পুল সংলগ্ন প্রাকৃতিক ও সু-নিবীড় পরিবেশে মানসম্মত ধর্মীয় ও আধুনিক বিদ্যাপীঠ হিসাবে ২০০৬ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠা করেছেন তা'লীমুন নিসওয়ান মহিলা ক্বওমী মাদরাসা। সঠিক ধর্মীয়, নৈতিক শিক্ষা ও যুগোপযোগী আধুনিক শিক্ষার সমন্বয়ে বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি গুণগত ও মানসম্মত শিক্ষাদানে সক্ষম। বর্তমান ক্বওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক প্রণীত নির্দেশনা ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে শিক্ষকবৃন্দের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়, শিক্ষার্থীদের নিরলস অধ্যয়ন ও অধ্যবসায় এবং অভিভাবক ও সংশ্লিষ্ট সকলের সম্মিলিত পরামর্শে প্রতিষ্ঠানটি ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে দাওরা-ই-হাদীস (মাস্টার্স) শ্রেণীতে উন্নিত হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ তা’য়ালা এই প্রতিষ্ঠানটিকে সঠিক ইসলাম ও সময় উপযোগী আধুনিক মান সম্মত শিক্ষার মারকায হিসাবে কবুল করে নিন, আমীন।

মুহতামিম সাহেবের বাণী

image-not-found

২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত তা'লীমুন নিসওয়ান মহিলা ক্বওমী মাদরাসা- এর ধারাবাহিক সাফল্যে শিক্ষার্থীদের চাহিদার প্রেক্ষিতে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে ওয়েব সাইটটি প্রস্তুত করা হয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও মহান আল্লাহ তাআলার অপার করুণায় এই প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে নোয়াখালী জেলার অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ। নিঃসন্দেহে এটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালকবৃন্দ, শিক্ষকবৃন্দ, অভিভাবকবৃন্দ, শিক্ষার্থীদের ও সর্বোপরি শুভাকাঙ্ক্ষীদের সমন্বিত প্রচেষ্টার ফসল। এলাকাবাসীর সেবার মনোভাব নিয়ে মান সম্পন্ন শিক্ষা প্রসারে এবং কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জন করে প্রতিষ্ঠানটি ইতমধ্যে একটি সম্মানজনক স্থান করে নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানের সার্বিক ক্ষেত্রে সফলতার জন্য মানুষের মাঝে এক ধরনের চাহিদা সৃষ্টি হওয়ায় তাঁরা তাঁদের কোমলমতি কন্যাদেকে এই প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনা করাতে যথেষ্ট আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। প্রতিষ্ঠানের সাফল্যে অভিভাকগণের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব ছাড়াও বিভিন্ন পর্যায়ে বেশ প্রসংশনীয় অবদান রাখছে। সবকিছুর মূলে রয়েছে প্রতিষ্ঠানের অটুট শৃঙ্খলা, শিক্ষক-শিক্ষীকাগণের একাগ্রতা ও আন্তরিক প্রচেষ্টা, শিক্ষিকা-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণের মধ্যে সমন্বয় সাধন। শিক্ষার্থীদেরকে দীনি পরিবেশে উপযুক্তভাবে গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য আমাদের রয়েছে বিরামহীন চেষ্টা ও পরিকল্পনা। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন, আমীন।